কেভিন কার্টার : পেশাদারিত্ব নাকি মানবিকতা

কেভিন কার্টার ছিলেন একজন দক্ষিণ আফ্রিকান ফটো সাংবাদিক ১৯৬০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবারগে জন্মগ্রহন করেন তিনি। ১৯৯৩ সালে দুভিক্ষের ছবি তুলতে তিনি সুদানে যান। সুদানে গিয়ে কার্টার একটি মৃতপ্রায় শিশুর ছবি তোলেন। এই ছবিটি তাকে ফটো সাংবাদিক হিসেবে সারা বিশ্বে খ্যাতি এনে দেয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য পরবর্তী কালে এই ছবিটি তার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাড়ায়।


কার্টারের সেই বহুল আলোচিত ছবিটি 


ছবিটিতে যেমনটি দেখা যাচ্ছে একটি মৃতপ্রায় শিশুর পেছনে একটি শকুন দাড়িয়ে আছে। বিষয়টি এমন যেন কখন শিশুটি মরবে আর শকুন শিশুটিকে নিজের খাবার বানাবে। ফটো সাংবাদিক হিসেবে ছবি তোলা কেভিন কার্টারের দায়িত্ব ছিল। কিন্তু তিনি যে উপায়ে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তা সারা বিশ্বে সমালোচিত হয়েছে। তিনি সঠিক ফোকাসের ছবি পাওয়ার জন্য ১০-১৫ মিটার দূর থেকে প্রায় ৩০ মিনিট সময় নিয়ে ছবিটি তোলেন।


১৯৯৩ সালে “নিউইয়র্ক টাইমস”এ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে ছবিটি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পরে। সমালোচনার তীর একে একে ধেয়ে আসতে থাকে কেভিন কার্টারের দিকে।
কেভিন কার্টার এই ছবিটির জন্য সাংবাদিকতার নোবল খ্যাত পুলিতজাত পুরস্কার লাভ করেন।
সমালোচকরা বলতে থাকেন কার্টার কি পেশাদারি মনোভাব দিয়ে এতই অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন যে তিনি মৃতপ্রায় শিশুটিকে না বাঁচিয়ে প্রায় আধা ঘণ্টা সময় নিয়ে ছবিটি তুললেন। তার কি উচিত ছিলো না শিশুটিকে পানি খাবারের ব্যবস্থা করে বাঁচানোর চেষ্টা করা।

কেভিন কার্টার 

এত সমালোচনা সহ্য করতে না পেরে কেভিন কার্টার ১৯৯৪ সালের ২৭ জুলাই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। মৃত্যুর আগে কার্টার একটি সুইসাইড নোট লিখে যান।
I am really, really sorry. The pain of life overrides the joy to the point that joy does not exist…. depressed…. without phone…. money for rent…. money for child support…. money for debts…. money!!!  I am haunted by the vivid memories of killings and corpses and anger and pain…. of starving or wounded children, of trigger –happy madmen, often police, of killer executioners… I have gone to join Ken if I am that lucky.

এই ঘটনা সারা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। পরবর্তীকালে ২০১০ সালে কেভিন কার্টারের এই কাহিনী নিয়ে হলিউডে “The Bang Bang Clubনামে একটি মুভি নির্মিত হয়েছে।
কার্টারের করুন পরিনতি আমাদেরকে পেশাদারিত্ব ও মানবিকতার চিরন্তন দ্বন্দ্বকে মনে করিয়ে দেয়। 


No comments:

Post a Comment