গণমাধ্যমের রাজনৈতিক অর্থনীতি

মুখবন্ধ
আধুনকি গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় গণমাধ্যম খুবই গুরুত্বর্পূণ। কিন্তু আজ এই গণমাধ্যমের ভূমিকা ও আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বলা হচ্ছে এ গণমাধ্যম শ্রেণীপক্ষপাতী। এ কথাটির একটা ভিত্তি আছে। বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমগুলোর আধেয় বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে এগুলো শ্রেণীপক্ষপাত মূলকভাবে বিভিন্ন ধরণের অনুষ্ঠান, সংবাদ, গান, নাটক, চলচ্চিত্র ইত্যাদি প্রচার করছে। এই আচরণের অংশ হিসেবে গণমাধ্যমে উঠে আসে এলিটদের কথা, মালিক ও শাসক শ্রেণীর কথা, তাদের স্বার্থের কথা।
বর্তমান সময়ে গণমাধ্যম হলো এক ধরণের শহুরে যান্ত্রিক মাধ্যম। গ্রামরে মানুষের কথা, তাঁদের মতামত, চাওয়া-পাওয়ার কথা গুরুত্বের সাথে তুলে ধরে না আজকের মিডিয়াগুলো। অন্যদিকে সংখ্যালঘুদের উপেক্ষা তো আছেই। তাই বর্তমান আলোচনায় বাংলাদেশের সার্বিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে, এ দেশীয় গণমাধ্যমগুলোর শ্রেণীপক্ষপাতমূলক আচরণ ও প্রচারণার স্বরূপ তুলে ধরা হয়েছে। তাছাড়া এর পেছনে কি কি কারণ কাজ করছে এবং এর ঐতিহাসিক ভিত্তির ধারা বর্ণনাসহ নানা দিক তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে এখানে।


‘শ্রেণীপক্ষপাতী গণমাধ্যম: একটি পর্যালোচনা’
লাতিন একটি প্রবাদ আছে- ‘ভক্স পপুলি ভক্স ডাই’। অর্থাৎ জনগণের কণ্ঠস্বরই ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর। আধুনকি সমাজে জনগণরে কণ্ঠস্বর হিসেবে কথা বলার দায়ত্বি গণমাধ্যমরে। বলা হয়ে থাকে গণতান্ত্রিক দেশে গণমাধ্যম সাধারণ মানুষরে কথা বলবে। কিন্তু গণমাধ্যম কি প্রকৃত অর্থে গণ মানুষের কথা বলে? বললে কতটা? 
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায়, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কিন্ত কতটা করছে? বর্তমানে গণমাধ্যম সব কাজ করে তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ বিবেচনা করে।এলিট শ্রেণীর ধারক ও বাহক গণমাধ্যমগুলো তাদের স্বার্থে জনগণকে পণ্যে পরণিত করেছে।
গণমাধ্যম কি আসলেই গণতন্ত্রের আদর্শকে সমুন্নত রেখে গণমানুষকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন বা উপস্থাপন করছে? গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে এরকম অনেক প্রশ্নই উঠে আসছে কারণ যান্ত্রিক গণতন্ত্রের এ যুগে গণমাধ্যম হলো শ্রেণীপক্ষপাতী। এদিকটার প্রতি নজর দিলে দেখা যায়, গণমাধ্যমে আজ উঠে আসছে এলিটদের কথা, শাসক শ্রেণীর কথা, মালিক শ্রেণীর এজেন্ডাভিত্তিক স্বার্থের কথা। শহুরে জীবন-যাপনের চিত্র এখন গণমাধ্যমে খুবই স্বাভাবিক ও সাবলীল। আর সংখ্যালঘুদের কথা তো কখনোই মিডিয়াতে জোরেশোরে উঠে আসে না। এখানেও চলে এক প্রকার রাজনীতি। এ প্রসঙ্গের সাথে সম্পৃক্ত আরেকটি বিষয় হলো ক্ষমতার প্রশ্ন। মিডিয়াও এখন ক্ষমতার চর্চা করে। পুরুষতান্ত্রিক মিডিয়ায় নারী হচ্ছে পণ্য, সংখ্যাগরষ্ঠিরে গণমাধ্যম র্স্বাথ ক্ষুণ্ণ করছে সংখ্যালঘুদরে। আমাদরে দেশের গণমাধ্যম পাশ্চাত্যকে অন্ধভাবে অনুকরণ করে, যা আমাদরে গণমাধ্যমরে সঠকি বকিাশরে পথে একটি বাঁধা।

রাজনতৈকি র্অথনীতি
ফরাসি অর্থবিজ্ঞানী আন্তুয়াঁ দ্য মক্রেঁতিয়ে প্রথম ‘পলিটিক্যাল ইকোনমি’ প্রত্যয়টি ব্যবহার করেন। ১৮ শতকে রাজনৈতিক অর্থনীতি ধারনার বিকাশ ঘটে। তখন পুঁজি, পুঁজির পুনরুৎপাদন, মজুরি, মুনাফা ও রাজস্বের মত বিষয়াদি অন্তভূক্ত ছিল। এ সময়ের অর্থশাস্ত্রবিদগণ ‘লেবার থিওরি অব ভ্যালু’ তত্ত্বে প্রথম জমিকে সম্পদের উৎস হিসাবে না দেখে শ্রমকে সম্পদ হিসাবে বিবেচনা করেন। এই ধারনার প্রবর্তক জন লক। ধারনাটিকে এগিয়ে নেন এড্যাম স্মিথ, ডেভিড রিকার্ডো, জন স্টুর্য়াট মিল প্রমুখ এবং চূড়ান্তভাবে কার্ল মাকর্স। ১৯ শতকে রাজনৈতিক অর্থনীতি ধারার ধ্রুপদী তাত্ত্বিক মূলত এঁরাই। পরে মার্কসবাদীদের হাতে এ ধারাটি নতুন মাত্রা লাভ করে, তারা রাজনতৈকি র্অথনীতরি আলচনায় শ্রম ও পুঁজরি সর্ম্পক, শ্রমরে শোষান ইত্যাদি ধারণা যুক্ত করনে। (রহমান, ২০১৩)

রাজনৈতিক অর্থনীতি শাস্ত্রের পন্ডিত ভিনসেন্ট মস্কো বলেন, “রাজনৈতিক অর্থনীতিকে সামাজিক সর্ম্পকের অধ্যয়ন বা শাস্ত্র হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। বিশেষত ক্ষমতা ও সর্ম্পকের শাস্ত্র হিসাবে, যা সম্পদ উৎপাদন, বন্টন এবং ভোগের পারস্পরিক শাসনে সর্ম্পকিত”।

ব্যবসায়িক মানেই কর্পোরেট। আর কর্পোরেট মানেই পুঁজিপতি। আজকের দিনে পুঁজিপতিরাই এলিট, শাসক, রাজনীতিবিদ বা মিডিয়া-মোগল-মালিক। আর একারণেই মিডিয়াতে আজ এলিট শ্রেণী থেকে শুরু করে শাসক-কর্পোরেট-পুঁজিপতি-মালিক শ্রেণী মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। ফলে সমাজে শ্রেণী আধিপত্য বা শ্রেণীপক্ষপাত রয়েই যাচ্ছে।

মার্কসের সমাজ কাঠামোর ঐতিহাসিক ব্যাখ্যায় মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে শ্রেণী-আধিপত্য। তিনি সমাজ কাঠামোর একটি ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা দেন। তাঁর মতে সমাজ কাঠামোকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। মার্কসবাদীরা বলেন, উৎপাদনের উপাদানসমূহ উৎপাদন সম্পর্ক স্থির করে দেয়। উৎপাদন সম্পর্কের দ্বারা অর্থনৈতিক কাঠামো আবার সামাজিক উপরিকাঠামো স্থির করে। মার্কস অর্থনৈতিক কাঠামোকে ভিত্তি বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর মতে এই অর্থনৈতিক কাঠামো সমাজের মূল ভিত্তি। আর এটাই উপরিকাঠামো বা super structure কে নিয়ন্ত্রণ করে। মিডিয়ার ক্ষেত্রেও এই তত্ত্ব প্রযোজ্য।

গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে ভিত্তি কাঠামো হল মালিকানা বা ক্ষমতা কাঠামো এবং এর উপরিকাঠামো হল গণমাধ্যমের আধেয়, ধরণ, মতাদর্শ, পলিসি।
গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে ভিত্তি কাঠামো দুই ভাবে উপরকিাঠামো বা আধেয়, ধরণ, মতাদর্শ, পলিসি ইত্যাদকে নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রথমত, বাজারে কোন মতগুলো থাকবে তা মালিক শ্রেণী নির্ধারণ করে দেয়।
দ্বিতীয়ত, বাজারে যে মতগুলো আছে তার আধেয়ও মালিকরা নিয়ন্ত্রণ করেন।
উদার বহুত্ববাদীদের বিপরীতে মার্কসবাদী তাত্ত্বকিদরে দৃষ্টিভঙ্গি ‘ক্রিটিক্যাল’ বা ‘র‌্যাডিক্যাল’ হিসাবে চিহ্নিত। ক্ল্যাসিকাল মার্কসবাদীরা মনে করেন, গণমাধ্যম সমাজের বিদ্যমান শ্রেণি আধিপত্যকে টিকিয়ে রাখতে চায়। এলিট শ্রেণির কর্মকান্ডের বিরোদ্ধে প্রশ্ন তোলে না, বরং এদের পক্ষে স্বৃকীতি উৎপাদনযন্ত্র হিসাবে কাজ করে, বৈধতা দান করার জন্য প্রচারনা চালায়।

রাজনৈতিক অর্থনীতি ধারায় মিডিয়াকে বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে মিডিয়ার যে সকল তাৎপর্যপূর্ণ বৈশিষ্ট গুরুত্ব পেয়েছে, সগেুলো হল:
১. মিডিয়া বার্তার পেছনে কাঠামোগত শর্তসমূহ যেমন মালিকানার ধরন ও কাঠামো, আয়ের উৎস এবং অডিয়েন্স প্রভৃতি নিয়ামক খতিয়ে দেখা; 
২. শ্রেণী ক্ষমতার সাথে এখন পরিবার-শিশু-পুরুষতন্ত্র, লিঙ্গ, নারীবাদ ও বর্ণের প্রশ্নও সংযুক্ত হয়েছে রাজনৈতিক অর্থনীতি ধারার গবেষণায়; 
৩. তথ্য ও যোগাযোগের পদ্ধতিগত বিশ্লেষণ করা অর্থাৎ তা কিভাবে, কোন পদ্ধতিতে উৎপাদিত হচ্ছে তা বিশ্লেষণ করা এবং
৪. এই পদ্ধতির ‘ইতিহাসের দিকে নজর দেয়া, বা কোন কোন পর্যায় অতিক্রম করে বর্তমান দশায় উপনীত হয়েছে-তার মানচিত্র অংকন করা। (রহমান, ২০১৩)

সম্প্রচারকারীদের মূল ব্যবসা হলো অডিয়েন্স উৎপাদন করা। দর্শকদের কাছে পৌছানোর রাস্তা দিয়ে, সেই দর্শকদের বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে বিক্রি করে দেয়াই হলো ব্যবসা। আমাদের দেশের প্রাইভেট চ্যানেলগুলোর সংবাদে যে প্রাইম টাইম নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই সময়টাতে বিজ্ঞাপনের দর হয় সর্বোচ্চ, কারণ দর্শকের সর্বোচ্চ মনোযোগিতা ক্রয়ের সুযোগ। অর্থাৎ প্রাইম টাইমে অনুষ্ঠান নয়, অডিয়েন্স বিক্রির রেট সবচেয়ে বেশি। (রহমান, ২০১৩)
সংবাদপত্রকে বলা হয়, ‘সমাজের আয়না’। কিন্তু তা কতটা সমাজের সাধারণ মানুষের কথা বলে, তা ভেবে দেখতে হবে। আবার সাধারণের পক্ষে কিছু বললেও দেখা যাবে যে, তার অন্তরালে রয়েছে নিরেট কোনো স্বার্থ উদ্ধারের প্রয়াস। সে স্বার্থ পুজিঁপতিদের স্বার্থ। পুঁজির পাহাড় গঠনের জন্য ‘বড়শিতে ফেলা হয় আর সাধারণেরা খাবার পেয়েছি এই ভেবে টোপ গেলে আর অমনি ধরা পড়ে টোপে।’
ক্রিটিকাল তত্ত্বের (Critical Analysis)  মাধ্যমে গণমাধ্যমের শ্রেণী চরিত্র উৎঘাটন করা করার প্রয়াস লক্ষ্য করা যায়। জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে ১৯২৩ সালে গড়ে ওঠে ÒInstitute of Social Research”এই প্রতিষ্ঠানের একটি বিশেষ ধারা ‘ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুল’ থেকেই Critical theory  জন্ম ও বিকাশ। ১ম ও ২য় বিশ্বযুদ্ধের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তন এ তত্ত্বের জন্মের পেছনে কাজ করেছে। মানুষ তখন যেকোনো রকমের নৈতিকতা সম্পর্কিত মতবাদকে শাশ্বত, চুড়ান্ত এবং অচল-অটল বলে মেনে নিতে সম্পূর্ণ রুপে অস্বীকার করে। তাদের দৃষ্টিতে তখন প্রতীয়মান হয় যে, তথাকথিত প্রতিটি সৎ-নৈতিকতার পেছনে শাসকশ্রেণীর স্বার্থ লুকিয়ে আছে। (হায়দার ও সামিন, ২০১৪)
ক্রটিকিাল তাত্ত্বিকদের মধ্যে রয়েছেন, Max Horkheimer, Freidrich pollock, Theodor Adorno, Erich Fromm, Herbert Marcuse, Franz Neumann, Otto Kirchheimer, Leo Lowenthal, Walter Benjamin, Henryk Grossmann I Arkadij Gurland প্রমুখ (হায়দার ও সামিন, ২০১৪)। 
এ তত্ত্বের তাত্ত্বিকরা যুক্তি, সত্য এবং সৌন্দর্যকে সম্পূণ ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার-বিশ্লেষণ করেছেন। দর্শন ও সমাজ বিষয়ক চিন্তায় তারা ইতিহাসকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তবে তাদের ভাবনায় ভবিষ্যতের সম্ভাবনাই পেয়েছে সর্বাধিক গুরুত্ব। জ্ঞান ইতিহাস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হলেও তারা মনে করেন সত্যকে তাৎক্ষণিকভাবে সামাজিক স্বার্থ থেকে আলাদা করে যৌক্তিকভাবে বিচার করা সম্ভব।
দুই মহাযুদ্ধের সময়ে পুঁজিবাদের যে বিকাশ ঘটে ক্রিটিক্যাল তত্ত্ব’তে তা নতুনভাবে আলোচিত হয়। এ আলোচনা মূলত সামাজিক দর্শন ও সামাজিক মনস্তত্ব সংক্রান্ত।

বাংলাদেশের গণমাধ্যমের পক্ষপাতী শ্রেণিচরিত্র
আধুনিক যুগের বহুজাতিক মিডিয়া দানবদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে George Gerbner বলেন, “Media giants have nothing to tell but plenty to sell.” 
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সেলিম রেজা নিউটন বাংলাদেশের গণমাধ্যমের শ্রেণিচরিত্র বিশ্লেষণ করে (২০০৩) বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোর পাঁচটি বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করেছেন। তিনি বাংলাদেশের গণমাধ্যমের চরিত্রের ক্ষেত্রে যেসব বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করেছেন সেগুলো হলঃ
১। নিজ নিজ বিজনেস-গ্রুপের পুঁজি-মুনাফা-ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষা করা
তার মতে বাংলাদেশের কোন গণমাধ্যম তার মালিক গোষ্ঠীর বিপক্ষে কোন সংবাদ প্রচার করে না। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মালিক গোষ্ঠীর ব্যবসায়িক স্বার্থের বিপক্ষে যেতে পারে এমন কোন সংবাদ গণমাধ্যম প্রচার করে না। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে যুগান্তর পত্রিকার কথা। যমুনা ফিউচার পার্ক নির্মাণের সময় যমুনা গ্রুপের বিপক্ষে জোড় করে সাধারণ মানুষের জমি দখলের অভিযোগ ওঠে। বিভিন্ন গণমাধ্যম এই সংবাদ প্রচার করলেও যমুনা গ্রুপের মালিকানাধীন যুগান্তর পত্রিকায় এই সংবাদ প্রকাশ করা হয়নি। বরং বিভিন্ন সময় বলা হয়েছে যমুনা গ্রুপ কোন জমি দখল করেনি এটা হল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা সংবাদ।
মূল কথা হল বাংলাদেশে বিভিন্ন বাণিজ্যিক গ্রুপ তাদের অন্যান্য ব্যবসা রক্ষা করার জন্য মিডিয়াকে ব্যবহার করে। ধনী গ্রুপ গুলোর কাছে মিডিয়া হল অন্য ব্যবসা রক্ষা ও প্রচার করার একটি টুল।
২। সাধারণভাবে বাংলাদেশের প্রাইভেট সেক্টরের বা ব্যবসায়িক খাতের সামগ্রিক স্বার্থ রক্ষা করা
বাংলাদেশের গণমাধ্যম প্রাইভেট সেক্টরের সমস্যা নিয়ে কথা বলে না। তাদের উদ্দেশ্য থাকে প্রাইভেট সেক্টরের সমস্যা প্রকাশ না করে চেপে রাখা। এর অন্যতম একটি কারণ হল প্রাইভেট সেক্টরের সাথে গণমাধ্যমের মালিক গোষ্ঠীর স্বার্থ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত থাকে। যাদের গণমাধ্যমের ব্যবসা আছে তাদের অন্য ব্যবসাও আছে।
এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরর কথা বলা যায়। এখানে বড় কোন সমস্যা না হলে গণমাধ্যম সংবাদ প্রচার করে না। যদিও সবসময় এই সেক্টরে শ্রমিক শোষণ চলছে। একদম প্রচার করে না বিষয়টা তেমন না, তবে আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারি দেখি না। বড় কোন ঘটনা ঘটলেও তার খুব একটা ফলোআপ দেখা যায় না।
৩। দেশী-বিদেশী কর্পোরেট পুঁজির অনুকূল সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিবেশ গঠন করা, তথা মার্কিন কায়দায় পুরোপুরি একটা ভোগবাদী সমাজ বা খাদক সমাজ গঠন করা
ভোগবাদী সমাজ তৈরি করতে পারলে ব্যবসা ভাল হবে। এই কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন শিল্প গোষ্ঠী তাদের নিজস্ব গণমাধ্যমের মাধ্যমে ভোগবাদী সমাজ সৃষ্টি করতে চায়। এই প্রসঙ্গে ট্রান্সকম গ্রুপের কথা বলা যায়। ট্রান্সকম গ্রুপের যেমন প্রথম আলো, ডেইলি স্টার এর মতো গণমাধ্যম আছে তেমনি রয়েছে পিজা হাঁট, কেএফসি এর মতো ব্যবসা। বাংলাদেশে পেপসিকোর বিভিন্ন পণ্য বাজারজাত করে ট্রান্সকম। সুতরাং তারা যদি গণমাধ্যমের দ্বারা খাদক সমাজ তৈরি করতে পারে তাহলে দিনের শেষে তারাই লাভবান হবে।

৪। ব্যবসার অনুকূল রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করা অর্থাৎ পশ্চিমা ঢঙের দ্বি-দলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কার্যকরভাবে চালু করার চেষ্টা করা, এবং রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড়বৃত্তির বাইরে স্বাধীন অবস্থান গ্রহণ করণ।  
৫। আমাদের দেশে শক্তিশালী বুর্জোয়া শ্রেণির ঐতিহাসিক অনুপস্থিতিতে সামাজিক-সাংস্কৃতিক-বেসরকারী পরিসরের এলিটদের নিয়ে রাজনীতিবিদগণকে বাদ দিয়ে রাজনৈতিক দলের পাল্টা সামাজিক শক্তি হিসাবে ব্যবসায়ীদের পরিচালনাধীন একটা সুশীল সমাজ গঠন করা এবং তার নেতৃত্ব ঐ ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি হিসাবে সংবাদপত্রের বা মিডিয়ার হাতে রাখা।  
বাংলাদেশে ২০০৭/৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এমন চেষ্টা আমরা লক্ষ্য করেছি। যেখানে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলকে বাদ দিয়ে ড. ইউনূসকে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে দাড় করিয়ে নতুন ধরণের সমাজ বাস্তবতা তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে।
সেলিম রেজা নিউটনের মতে প্রথম তিনটি বৈশিষ্ট্য সব গণমাধ্যমের জন্য প্রযোজ্য। এবং তৃতীয় ও চতুর্থ বৈশিষ্ট্য শুধুমাত্র প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার এর জন্য প্রযোজ্য।

বাংলাদেশে শ্রেণিপক্ষপাতী গণমাধ্যমঃ কয়েকটি কেস 
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যম কিভাবে পক্ষপাতী আচরণ করে সে বিষয় বোঝার জন্য নিচে কিছু কেস স্টাডি সংযুক্ত করা হল। 
২০০২ সালে অ্যাংকর ও প্রথম আলো যৌথভাবে মা দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন করে। ১৫ মে, ২০০২ তারিখে এই আয়োজনের নানা কথা তুলে ধরা হয় পত্রিকাটির ‘নারীমঞ্চ’ নামক পাতায়। ঐ পাতার পৃষ্ঠা-লোগোর জন্য গেছে ১৯.২৫ বর্গ ইঞ্চি জায়গা। বাকি মোট মুদ্রিত জায়গার (২৮৮.২৫ বর্গ ইঞ্চি) মধ্যে ২০৭.৮৭৫ বর্গ ইঞ্চি, মানে ৭২ শতাংশের বেশি জায়গা গেছে অ্যাংকর ও প্রথম আলো অনুষ্ঠানের পেছনে। ওইদিন নারীমঞ্চের প্রধান প্রতিবেদন শুধু মায়েদের জন্যই দিনটি শিরোনামের প্রতিবেদনে নারীকে পেশাজীবী হিসেবে প্রদর্শন না করে, উপস্থাপন করা হয়েছে শুধু একজন মা হিসেবে যার কাজ শুধু ঘর সামলানো (নিউটন, ২০১৩)
একই বছরের ২৬ মে তারিখে প্রথম আলো তাদের প্রথম পাতায় গুরো দুধ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যার শিরোনাম ছিলঃ  
           মদ সিগারেটর সঙ্গে এক কাতারে গুরো দুধ
বিলাসপণ্য নিয়ন্ত্রনের নামে
পুষ্টি সংগ্রহে প্রতিবন্ধকতা
এই প্রতিবেদনে গুরো দুধ আমদানির মাধ্যমে দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণের কথা বলা হয়েছে কিন্তু গুরো দুধের বিভিন্ন ক্ষতিকর দিকের কথা বলা হয়নি। গুরো দুধের মধ্যে ক্ষতিকর ম্যলামাইন পাওয়া গেছে যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর এর প্রভাবে ক্যান্সার সহ বিভিন্ন মারাত্মক রোগ হতে পারে (নিউটন, ২০১৩)
পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য গুরো দুধ আমদানি না করে দেশে খামার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব এবং এর মাধ্যমে অনেক বেকারের কর্মসংস্থান হতে পারে। কিন্তু প্রথম আলোর মতো সংবাদপত্র সে কথা না বলে গুরো দুধ আমদানির কথা বলে কারণ বলতে তারা বাধ্য। মা দিবসের অনুষ্ঠানের নামে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য করছে।



2004 সালে প্রকাশিত ছয়টি জাতীয় দৈনিকের নারীপাতা বিশ্লেষণ করে একটি গবেষণা পরিচালিত হয়েছিল। গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল নারীপাতায় প্রকাশিত সংবাদের ক্ষেত্রে শ্রেণি কিভাবে ভূমিকা রাখে তা বিশ্লেষণ করা। এই গবেষণার ক্ষেত্রে ২০০৩ সালের এবিসি রিপোর্ট অনুযায়ী সর্বাধিক বিক্রিত ছয়টি সংবাদপত্রকে নেয়া হয়েছিল। এই সংবাদপত্রগুলো হলঃ দৈনিক যুগান্তর, প্রথম আলো, দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক ইনকিলাব, দৈনিক জনকণ্ঠ এবং আজকের কাগজ। গবেষণায় যে ফলাফল পাওয়া গিয়েছিল তাহলঃ
১। অঞ্চলভিত্তিকঃ  প্রকাশিত নারী বিষয়ক সংবাদের ৮৪.২০ ভাগ ছিল শহর ও ১৫.৮০ ভাগ ছিল গ্রাম বা মফস্বলের। ছবির ক্ষেত্রে এই হার ছিল ৮১.৪৭ ও ১৮.৫৩
২। অর্থনৈতিক শ্রেণিভিত্তিকঃ উচ্চবিত্তের সংবাদ ও ছবির হার ছিল যথাক্রমে ৫৩.০১ ও ৫৬.৬১ ভাগ। মধ্যবিত্তের ক্ষেত্রে তা যথাক্রমে ৩৬.৫১ ও ৩০.৫৮ এবং নিম্মবিত্তের ক্ষেত্রে তা যথাক্রমে ১০.৪৮ ও ১২.৮১।
৩। পেশাভিত্তিকঃ উৎপাদনশীল খাতে কর্মরত নারীর সংবাদ ও ছবির হার যথাক্রমে ২০.১১ ও ২২.৮৮। অন্যদিকে আনুৎপাদনশীল খাতে কর্মরত নারীর সংবাদ ও ছবির হার ৭৯.৮৯ ও ৭৭.১২। আমাদের গণমাধ্যম নারীকে গৃহিণী বানিয়ে ঘরে রাখতেই বেশি পছন্দ করে।
৪। বয়সভিত্তিকঃ ১৮-৪০ বয়সের নারীর সংবাদ ও ছবি ছিল যথাক্রমে ৮২.১৬ ও ৮৮.৫৪ এবং অন্যান্য বয়সের ক্ষেত্রে তা ছিল ১৭.৮৪ ও ১১.৪৬ ভাগ।
৫। সমস্যাকেন্দ্রিকঃ নারীপাতায় প্রকাশিত সংবাদ ও ছবির শতকরা যথাক্রমে ৩৬.৯২ ও ৩৩.৬৬ ভাগ ছিল সমস্যাসংক্রন্ত। একক সংবাদ হিসেবে এটাই সবচেয়ে বেশি। পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজ নারীকে সমস্যা হিসেবে উপস্থাপন করতে ভালবাসে। সংবাদপত্রও এর ব্যতিক্রম না। (উদ্ধৃত আলম, ২০১৩)
জেন্ডার ইন মিডিয়া বুলেটিনে বলা হয়েছে, “In Bangladesh, when women make front page news, it usually related to acid burnings, rape or other torture related incidents or even death…. it actually also re-enforces stereotypes of women as the weaker gender, women as victims of male brutality.”
শ্রেণিপক্ষপাতী গণমাধ্যম নারীকে দুর্বলভাবে উপস্থাপন করার মাধ্যমে সমাজের পুরুষতান্ত্রিকতা টিকিয়ে রাখতে চায়। গণমাধ্যম নারীকে উৎপাদনশীল কাজে না দেখিয়ে তাদেরকে শুধুমাত্র মা, গৃহিণী বা কেবল তাদের নারী পরিচয়কে বড় করে দেখিয়ে ঘরের ভিতর আটকে রাখতে চায়। এ প্রসঙ্গে গীতি আরা নাসরীন বলেন, ইদানিং পত্র-পত্রিকা বা টেলিভিশন দেখলে মনে হবে নারীর প্রধান সমস্যা হচ্ছে, তিনি মুখে শসা না কলা মাখবেন, চুল ছাড়া না খোলা রাখবেন, ডায়েট কিভাবে করবেন, ঘর সাজিয়ে রাখবেন কিভাবে... ইত্যাদি ইত্যাদি। গণমাধ্যম যত রকম ভাবে চুলের, ঠোঁটের, গালের, দাতের, পায়ের গোড়ালির, নখের যত্ন নিতে ও চর্চা করতে বলা হয়; যদি কোন নারী এসবের একশো ভাগের এক ভাগও করেন, তার যাপিত জীবনের দুই তৃতীয়াংশ এও কাযে ব্যয় হওয়ার কথা।“ (নাসরীন, ২০০৬)
৮ নভেম্বর, ২০০৯ তারিখে ‘প্রথম আলো’ প্রত্রিকা ১ম পৃষ্ঠার উপরে একটি আলাদা মলাট যুক্ত করে যার বিষয় ছিল বিষয় সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড। সেদিনই তৃতীয় পাতায় লিড নিউজ ছিল সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড। কোন বিচারেই তৃতীয় পৃষ্ঠার লিড নিউজ হওয়ার যোগ্যতা ছিল না সংবাদটির, কিন্তু তবুও হয়েছে। কারণ সংবাদ যেখানে যখন পণ্য, সেখানে ব্যবসাই মুখ্য, নীতি নৈতিকতার কোন মূল্য নেই।
২৯ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে ট্রান্সকম গ্রুপের মালিকানাধীন The Daily Star ব্যনার শিরোনাম করে The Daily Star ICT Awards নিয়ে। সংবাদমূল্য হিসেবে খবরটির তেমন মূল্য নেই কিন্তু তবুও ঐ ঘটনা নিয়ে ব্যানার শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করার কারণ মুলত নিজেদের বিজ্ঞাপন করা। এর মাধ্যমে প্রত্রিকাটির শ্রেণিপক্ষপাতী আচরন স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সংবাদপত্রের মূল কাজ থেকে সরে গিয়ে অর্থাৎ মানুষকে সংবাদ প্রদান থেকে বিরত থেকে তারা সংবাদের মত করে নিজেদের বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে, যা মারাত্মকভাবে সাংবাদিকতার নীতিমালা পরিপন্থী। ঘটনাটির যে কোন সংবাদমূল্য ছিল না তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ হল অন্য কোন জাতীয় সংবাদপত্র এই ঘটনাকে নিয়ে সংবাদ প্রচার করেনি লিড নিউজ বা প্রথম পাতায় স্থান দেয়া তো দুরের কথা। 
মিডিয়া বার্তার পেছনে কাঠামোগত শর্তসমূহ যেমন মালিকানার ধরন ও কাঠামো, আয়ের উৎস এবং অডিয়েন্স প্রভৃতি নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।
মালিকানা কীভাবে গণমাধ্যমের আধেয়ের উপর প্রভাব বিস্তার করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তার উজ্জ্বল উদাহরণ এটিএন বাংলা। যেখানে গানের অনুষ্ঠানের প্রায় নিয়মিত শিল্পী হলেন এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান এবং তার স্ত্রী ইভা রাহমান। যদিও গান গাওয়ার কোন যোগ্যতা অর্থাৎ গান সম্পর্কে জ্ঞান তাদের নেই।

উপসংহার
নিরপেক্ষতার কেবলই মিথ। মিডিয়া ক্ষমতাশীনদের ক্ষমতাকে আরো পাকাপোক্ত করার জন্যই স্বীকৃতি উৎপাদনের কাজ করে যাচ্ছে। কর্পোরেট শ্রেণীর সকল কর্মকান্ডগুলো বৈধতাদানেরর জন্য একযোগে কাজ করে যাচ্ছে গণমাধ্যম। যে কারণে বহুজাতিক কম্পানীগুলোর দুর্নীতি কিংবা অপকর্মের চিত্র আমাদের গণমাধ্যমে সংবাদ হয়না।
মিডিয়াগুলো যে- নিরপেক্ষতার কথা অহরহ কপচায় এবং জনগণের পক্ষে থাকার যে দোহাই দেয় তা ঠিক না। মিডিয়া অতি-অবশ্যই শ্রেণী-নির্ভর, মিডিয়ার অতি অবশ্যই রাজনৈতিক ভূমিকা আছে এবং আধিপত্যশীল ধারার মিডিয়া সমাজের ক্ষমতাশীল শ্রেণীর মতাদর্শই বহন করবে।
শ্রেণীপক্ষপাতী মিডিয়াব্যবস্থা তার আধেয়তে বিশেষ শ্রেণীকে ঠাঁই দিয়ে শ্রেণী বৈষম্যকে টিকিয়ে রেখেছে। মিডিয়া কিছু বিশেষ শ্রেণীর ধ্যান-ধারণা, মতাদর্শ, আচার-আচরণ, জীবনযাপনকে তুলে ধরে সাধারণ দর্শক-শ্রোতা-পাঠকদের কাছ থেকে গ্রহণযোগ্যতা আদায় করে নিচ্ছে। গণমাধ্যমগুলো বারাবার শ্রেণী বৈষম্যকে ভিন্ন ভিন্ন আদলে তুলে ধরছে। কিন্তু এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে কখনো আওয়াজ তুলে না, রবং আধেয়গুলোতে ভিন্ন মাত্রার সংযোজন করে অডিয়েন্সদের এটাই বুঝায় যে, এটাই স্বাভাবিক, সমাজে শ্রেণী বৈষম্য থাকবেই। তবে এক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই বিকল্প মিডিয়ার ব্যাপারে ভাবতে হবে, বিবেচনায় আনতে হবে।
বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীর দেশে যেখানে দেশের উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে গণমাধ্যমের কাজ করার কথা, সেখানে গণমাধ্যম কেবলই পুজিপতি শ্রেনীর স্বার্থ আদায়ে কাজ করছে। এ জায়গা থেকে কিভাবে বের হয়ে আসা যায় তা নিয়ে গভীরভাবে ভাবার সময় এসেছে।

তথ্যসূত্রঃ 

আলম, . (২০১৩) কোটাভিত্তিক নারিপাতাঃ পুরুস্তন্ত্র ও পুঁজিবাদের কোটারি ব্যবস্থা In . হক, & . . মানুম (Eds.), মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতিঢাকা: আগামী প্রকাশনী

ইসলাম, . মো. (২০১০) সামাজিক গবেষণা ঢাকা : তাসমিয়া পাবলিকেশন্স

খান, . . (২০০০) পরার্থপরতার অর্থনীতিঢাকা : দি ইউনিভসিটি প্রেস লিমিটেড

চমস্কি, . (২০০৪) গণমাধ্যমের চরিত্র ঢাকা: মনফকিরা

নাসরীন, . . (২০০৬) গণমাধ্যম ও নারী চন্দ্রাবতী

নিউটন, . . (২০১৩) বাজারের যুগের সাহিত্য ও সাংবাদিকতার আব্বু আম্মু সমাচার In . হক, & . . মানুম (Eds.), মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতিঢাকা: আগামী প্রকাশনী

রহমান, . (২০১৩) গণমাধ্যমের রাজনৈতিক অর্থনীতিঃ একটি তাত্ত্বিক পর্যালোচনা In . হক, & . . মানুম (Eds.), মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতিঢাকা: আগামী প্রকাশনী

হায়দার, ., & সামিন, . (২০১৪) গণযোগাযোগ তত্ত্ব ও প্রয়োগঢাকা: বাংলাদেশ প্রেস ইনন্সিটিউট


3 comments:

  1. লেখাটা সুন্দর...আশা করি কালকের পরিক্ষায় বেশ সহায়ক হবে...

    ReplyDelete
    Replies
    1. ঠিক বলেছো জোনাকি। ৭ মে ২০২৩ এর পরীক্ষায়ও অনেকটা কাজে লাগবে।

      Delete
  2. খুবই তথ্যবহুল লেখা। অনেকেই উপকৃত হবে। অনেক অনেক শুভকামনা।

    ReplyDelete