'সার্কুলার রিপোর্টিং ' কি?

'সার্কুলার রিপোর্টিং' বলতে এমন একটি বর্ণনা কৌশলকে বোঝায় যেখানে আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় কোন তথ্য বা সংবাদ অনেকগুলো সূত্র থেকে স্বাধীনভাবে আসছে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেই তথ্যগুলোর উৎপত্তিস্থল অভিন্ন।


বর্তমান আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির যুগে গুজব ছড়ানোর একটি অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে সার্কুলার রিপোর্টিং ব্যবহৃত হয়। যা ব্যবহার করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার প্রেচেষ্টা প্রায়শই দেখা যায়। গণমাধ্যমের প্রেক্ষাপটে ‘সার্কুলার রিপোর্টিং’-কে হলুদ সাংবাদিকতার আধুনিকতম সংস্করণ বলা যেতে পারে।

একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা যাক। ধরা যাক একজন রাজনৈতিক নেতা তার প্রতিপক্ষ কে অনৈতিকভাবে ঘায়েল করতে চান। এজন্য তিনি নামসর্বস্ব ৩টি ‘অনলাইন পত্রিকা’ চালু করলেন। যেসব পত্রিকার নেই কোন নিজস্ব অফিস বা সংবাদকর্মী, এবং আইনি ঝামেলা এড়াতে পোর্টালগুলো পরিচালনা করা হয় বিদেশ থেকে। এসব ‘অনলাইন পত্রিকা’তে অন্য গণমাধ্যমের সংবাদ কপি-পেস্ট করা হয় এবং পাশাপাশি ছড়ানো হয় বিশেষ ব্যক্তির নামে মিথ্যাচার। ১ম পত্রিকাতে নেতা তার প্রতিপক্ষের নামে একটি মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেন এবং ২য় পত্রিকায় সেই সংবাদ ১ম পত্রিকার বরাত দিয়ে প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে ৩য় পত্রিকায় তিনি একই সংবাদে ১ম ও ২য় পত্রিকার রেফারেন্স দেন, যা সংবাদের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে সাহায্য করে। একজন সাধারণ মানুষ যখন একই সংবাদ একাধিক জায়গায় পড়েন বা একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে বলে জানতে পারেন তখন এই মিথ্যা সংবাদ তার কাছে সত্য বলে মনে হওয়ার সম্ভবনা বৃদ্ধি পায়।

যার নামে মিথ্যাচার করা হয়েছে তিনি আইনের আশ্রয় নিলে যারা মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছেন তারা খুব সইজেই নিজউ পোর্টালগুলো বন্ধ করে দিতে পারেন। ফলে তাদেরকে ধরা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর জন্য কঠিন হয়ে যায়। বিভিন্ন দেশের নির্বাচন, বিপ্লব ও যুদ্ধের সময় সার্কুলার রিপোর্টিং এর প্রকোপ বৃদ্ধি পায়।   

No comments:

Post a Comment