ম্যাগনা কার্টা বা ‘দ্যা
গ্রেট চার্টার’ একটি ঐতিহাসিক দলিল। মূলত ইংল্যান্ডে রাজার ক্ষমতাকে সীমিত করার
উদ্দেশ্য ১২১৫ সালে এটি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির একদিকে ছিলেন ইংল্যান্ডের রাজা
জন অন্যদিকে ছিল ধনী ও অভিজাত ব্যারন।
রাজা জন
তার শাসনামলে অতিরিক্ত কর আরোপ এবং একনায়কতান্ত্রিক শাসনের জন্য জনগণের মধ্যে
ব্যাপকভাবে অজনপ্রিয় হয়ে পড়েছিলেন। যার ফলে জনগণের চাপে রাজা জন ম্যাগনা
কার্টা চুক্তি করতে বাধ্য হন। যেখানে বিশ্বের ইতিহাসে প্রথমবারের
মতো রাজার ক্ষমতা সীমিত করা হয় এবং জনগণের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়।
ম্যাগনা
কার্টার সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ দিক হলো আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার।
এর মাধ্যমে রাজাকে আইনের অধীন করা হয়। এছাড়া ম্যাগনা কার্টায় বিভিন্ন ধরনের মৌলিক
অধিকারও প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যেমন ব্যক্তি মালিকানার সুরক্ষা, বিচার পাওয়ার
অধিকার এবং বেআইনি গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে সুরক্ষা।
ম্যাগনা
কার্টা শুধুমাত্র ইংল্যান্ডের জনগণের জন্য নয়, বরং পুরো বিশ্বের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ
দলিল। এই দলিলের প্রভাব শুধু ইংল্যান্ডেই সীমাবদ্ধ ছিল না, পরবর্তীতে বিশ্বের বিভিন্ন
দেশের সংবিধান ও আইন প্রণয়নে ম্যাগনা কার্টা উদাহরণ হিসেবে কাজ করেছে। আধুনিক
গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের ধারণাকে বিকাশের পথ দেখিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র
ও ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশের বিপ্লবকে ম্যাগনা কার্টা অনুপ্রাণিত
করেছে।
বিশ্বজুড়ে আইনের শাসন, গণতন্ত্র, এবং মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় ম্যাগনা কার্টা সুদূরপ্রসারী প্রভাব রেখেছে এবং এর মাধ্যমেই বিশ্বে রাজতন্ত্রকে সরিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ভিত্তি রচিত হয়েছিল। এখনো বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রপন্থী মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস ম্যাগনা কার্টা।
No comments:
Post a Comment