সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘দেশে বিদেশে’

সৈয়দ মুজতবা আলীর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ বিখ্যাত ভ্রমণ কাহিনি ‘দেশে বিদেশে’। শান্তিনিকেতনে পড়ালেখা শেষ করে মাত্র ২৩ বছর বয়সে আফগান সরকারের অনুরোধে ‘কাবুল কৃষি কলেজে’ ফারসি এবং ইংরেজি ভাষার শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন সৈয়দ মুজতবা আলী। ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ সালে লেখকের আফগানিস্তান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে গ্রন্থটি রচিত। ১৯৪৮ সালে ধারাবাহিকভাবে ‘দেশ’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ‘দেশে বিদেশে’। এটি শুধু একটি ভ্রমণলিপি নয় বরং তৎকালীন আফগানিস্তানের ইতিহাসের একটি অনবদ্য দলিল।

বইয়ের কাহিনি শুরু হয় লেখকের কলকাতা থেকে পেশোয়ার হয়ে কাবুল যাওয়ার বর্ণনা দিয়ে। কাবুলে তিনি বিচিত্র চরিত্রের মানুষের সাথে মিশেছেন, তাদের জীবন পদ্ধতি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। অত্যন্ত সূক্ষ্ণ রসবোধের সাহায্যে সেসব অভিজ্ঞতা ও দৈনন্দিন জীবনের কার্যকলাপ তুলে ধরেছেন গ্রন্থটিতে। বাদ যায়নি তৎকালীন আফগানিস্তানের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, শিক্ষা ও প্রকৃত ধর্মচর্চার নানা দিক।

কাবুলে অবস্থানের শেষ পর্যায়ে প্রত্যক্ষ করেছেন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন। এবং বাচ্চায়ে সাকোর আক্রমণে বিপর্যস্ত কাবুল ত্যাগের করুণ ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় এই করুণ আখ্যান। বইটিতে অন্যতম প্রধান চরিত্র কাবুলে লেখকের ভৃত্য আবদুর রহমান। তার নানা হাস্যরসাত্মক ও বিচক্ষণতার বিবরণ রয়েছে বইটিতে। আবদুর রহমানের সাথে লেখকের বিদায়ের মুহূর্তের ঘটনার বিবরণ দিয়ে কাহিনি বর্ননা শেষ হয়।

উল্লেখযোগ্য কিছু চরিত্র হলো- অধ্যাপক বেনওয়া, পেশোয়ারের পুলিশ কর্মকর্তা শেখ আহমদ আলী খান পাঠান, অধ্যাপক খুদা বখশ, অধ্যাপক বগদানফ, মুঈন-উস-সুলতান, আফগানিস্তানের যুবরাজ ইনায়েতুল্লাহ প্রমুখ। 


No comments:

Post a Comment