ইংরেজ আইনবিদ ও জুরি হেনরি ডি ব্র্যাকটন প্রথম ডকট্রিন অব নেসেসিটির ধারণা প্রদান করেন। প্রয়োজনীয়তা কোনো আইনের ধার ধারে না। আইন যখন মানুষের অধিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ তখন সেই আইন অমান্য করা ছাড়া মানুষের সামনে আর কোন রাস্তা থাকে না। প্রয়োজনীয়তা থেকেই মানুষ আইনের বাইরে গিয়ে কাজ করতে বাধ্য হয়। এটিই হলো- ডকট্রিন অব নেসেসিটি বা প্রয়োজনীয়তার মতবাদ।
রাজনৈতিক বিপ্লব, গণঅভ্যুত্থনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা বদল, কিম্বা সামরিক অভ্যুত্থানের মতো রাষ্ট্রীয় বা রাজনৈতিক ঘটনা আইনবহির্ভূত হলেও সামগ্রিক পরিস্থিতি বিচারে প্রয়োজনের তাগিদে ঘটেছে বলে আদালতে এসব ঘটনাকে ‘বৈধতা’ দেওয়ার নজির রয়েছে। বাস্তব প্রয়োজনের বিদ্যমান আইনের বাইরে গিয়ে কোন বিষয়ে বৈধ বলে ঘোষনা করা হয় ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’ প্রয়োগ করে। ডকট্রিন অব নেসেসিটি প্রয়োগ করা শুধু এমন পরিস্থিতিতেই ন্যায্য, যেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অন্য কোন রাস্তা খোলা নেই।
ফেডারেশন অব পাকিস্তান বনাম মৌলভি তমিজউদ্দিন খান (১৯৫৫)-এর মামলা ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’র একটি উদাহরণ। পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ ১৯৫৪ সালে গণপরিষদ ভেঙ্গে দিলে তমিজউদ্দীন খান উক্ত পদক্ষেপে আপত্তি জানিয়ে সিন্ধু কোর্টে ‘তমিজউদ্দীন খান বনাম ফেডারেশন অব পাকিস্তান’ নামে এক মামলা দায়ের করেন এবং এতে তিনি জয়লাভ করেন। তবে আপীলে ফেডারেল কোর্ট সিন্ধু কোর্টের রায়কে ‘রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে’ বাতিল করে দেয়। এ রায় ছিল দ্বিধাগ্রস্ত। পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ মুনির গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদকে সংবিধান বহির্ভূত জরুরি ক্ষমতার ব্যবহারকে আইনগত বৈধতা দেন।
No comments:
Post a Comment