Monday, April 30, 2018

রিলেশনাল স্টেজ মডেল

রিলেশনাল স্টেজ মডেলঃ 

ন্যাপের রিলেশনাল স্টেজ মডেলের মাধ্যমে সম্পর্কের ভাঙ্গা-গড়া ব্যাখ্যা করা হয়। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ মার্ক এল ন্যাপ ১৯৭৮ সালে এই তত্ত্ব প্রদান করেন। এই তত্ত্বে মানবীয় সম্পর্কে ১০ টি স্টেজের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা হয়। এই গবেষণার তাত্ত্বিক কাঠামো হিসেবে ন্যাপের রিলেশনাল স্টেজ মডেল ব্যবহার করা হবে। এই তত্ত্ব অনুসারে আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ শুরুর পর্যায়ে ৫ টি স্টেজ ও সম্পর্ক ভাঙনের পর্যায়ে ৫ টি স্টেজ থাকে।

রিলেশনাল স্টেজ মডেলে অনুসারে সম্পর্ক শুরুর ৫ টি স্টেজ হলঃ 

১) সূচনা (Initiating) আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগের প্রথম পর্যায় হলো সূচনা। এই স্তরে বিভিন্ন ব্যক্তি পরস্পরের সংস্পর্শে আসে। সূচনা যোগাযোগের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই স্তরেই ব্যক্তি সম্পর্কে একটি প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায়। 

২) নিরীক্ষা (Experimenting) সূচনা স্তরের পর আসে নিরীক্ষা। সূচনা স্তরে কাউকে ভাল লাগলে ব্যক্তি তার প্রতি আগ্রহী হয় এবং তাকে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখে। এই পরীক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তি সিদ্ধান্ত নেয় সে সম্পর্কে অগ্রসর হবে কিনা? 

৩) সম্পর্ক জোরদার (Intensifying) পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে যদি মনে হয় এই সম্পর্কে অগ্রসর হওয়া যায় তাহলে যোগাযোগের দুই পক্ষ সম্পর্ক জোরদার করে। এই স্তরে তারা পরস্পরের কাছে নিজেদের পছন্দ-অপছন্দের বিষয় শেয়ার করে। 

৪) একীভূতিকরণ (Integrating) জোরদারের পরের স্তর হলো একীভূতিকরণ। এই স্তরে এসে তারা পরস্পর আরও ঘনিষ্ঠ হয়। এবং একসাথে পাবলিক পরিবেশে ঘোরাঘুরি করে। 

৫) বন্ধন (Bonding) এই স্তর হলো সম্পর্কের সর্বোচ্চ পর্যায়। বন্ধন স্তরে এসে সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং নতুন মাত্রা পায়। অনেক ক্ষেত্রে এই সম্পর্কগুলো বিবাহের মত পর্যায়ে চলে যায়। 

রিলেশনাল স্টেজ মডেলে অনুসারে সম্পর্ক ভাঙার ৫ টি স্টেজ হলঃ 

১) পার্থক্য হওয়া (Differentiating) এই স্তরে এসে বিভিন্ন বিষয়ে মতের পার্থক্য সৃষ্টি হয়। ‘আমরা’ ভাবের স্থলে ‘আমি’ ভাবের উদ্ভব হয় এই পর্যায়ে এসে। 

২) বেষ্টন করা (Circumscribing) সম্পর্ক ভাঙনের এই স্তরে এসে পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ কমে যায়। তারা নিজেদেরকে একটি অদৃশ্য বেষ্টনীর মধ্যে আটকে ফেলে। কথা বলা কমে যায় এই স্তরে এসে। 

৩) অচলাবস্থা (Stagnating) নিজেকে বেষ্টন করে রাখতে রাখতে ব্যক্তি এক সময় এটার সাথে অভ্যস্ত হয়ে যায়। এবং তার সঙ্গীর সাথে যোগাযোগ করার প্রয়োজন বোধ করে না। 

৪) পরিহার (Avoiding) এই স্তরে এসে ব্যক্তি তার সঙ্গীকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। তারা যতদূর সম্ভব পরস্পরের মুখোমুখি হওয়া থেকে বিরত থাকে। একজনকে দেখলে অন্যজন পাশ কাটিয়ে চলে যায়। 

৫) সমাপ্তি (Terminating) এই স্তরে এসে ব্যক্তি সম্পর্কের পরিসমাপ্তি ঘটায়। তারা সকল ধরণের সম্পর্ক শেষ করে দেয়, সকল ধরণের যোগযাযোগ বন্ধ করে দেয়। সম্পর্ক একবার এই স্তরে চলে আসলে আর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব হয় না। 

No comments:

Post a Comment